Passport Mobile Van: পাসপোর্ট তৈরির জন্য আগে মানুষকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হতো। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে বারবার আসা-যাওয়া, দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা এগুলো ছিলো প্রতিদিনের ঘটনা। কিন্তু এখন আর পাসপোর্টের জন্য এদিক-ওদিক ছুটতে হবে না। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস মানুষকে এক বিশাল উপহার দিয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে যারা থাকেন, তাদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করতে এখন মোবাইল ভ্যান সার্ভিস চালু হয়েছে।
এই পরিষেবা চালু করার মূল উদ্দেশ্য হলো দূরবর্তী এলাকায় পাসপোর্টের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। ফলে গ্রামের মানুষও এখন সহজেই তাদের পাসপোর্ট করতে পারবেন। মোবাইল ভ্যান সরাসরি আবেদনকারীর বাড়িতে এসে বা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আবেদন গ্রহণ করবে। এতে সময় ও শ্রম দুটোই বাঁচবে।
Passport Mobile Van পরিষেবা চালুর ঘোষণা
শনিবার দেরাদুনের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এই মোবাইল ভ্যান সার্ভিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসার বিজয় শঙ্কর পান্ডে এই সেবার উদ্বোধন করেন। তিনি জানান, ভ্যানে বায়োমেট্রিক্স ক্যাপচারিং ডিভাইসও লাগানো হয়েছে, যাতে দ্রুত এবং কার্যকরভাবে পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
এছাড়া, ভ্যানের ট্রায়াল চালু হয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে। ট্রায়াল পর্বে প্রতিদিন ৫টি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে ভ্যানটির কার্যকারিতা যাচাই করা হয়েছে।
কীভাবে কাজ করবে মোবাইল ভ্যান
এই মোবাইল ভ্যান মূলত সেইসব এলাকার মানুষের জন্য যাদের পাসপোর্ট অফিসে পৌঁছাতে অসুবিধা হয়। পাসপোর্ট অফিসে আসতে না পারা মানুষ এখন মোবাইল ভ্যানের সুবিধা নিতে পারবেন। ভ্যানের মাধ্যমে আবেদনকারীরা তাদের বাড়ি থেকে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ভ্যানের মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরির আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- প্রাথমিক যোগাযোগ: যারা মোবাইল ভ্যানের মাধ্যমে পাসপোর্ট করতে চান, তাদের আগে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে কথা বলে আসতে হবে। এর মাধ্যমে আবেদনকারীরা সঠিক সময়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে পারবেন।
- ভ্যানের কার্যকারিতা: প্রাথমিকভাবে, ট্রায়াল শেষে এই ভ্যানগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী দূরবর্তী এলাকায় পাঠানো হবে। সাধারণত দিনে ৫০টির বেশি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করা হবে না।
- কোনো অতিরিক্ত ফি নেই: ভ্যানের মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরির জন্য কোনও অতিরিক্ত ফি নেওয়া হবে না। এটি সরকার কর্তৃক পরিচালিত একটি সেবা।
- অনলাইন নিবন্ধন: আবেদনকারীরা www.passportindia.gov.in ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে পারবেন। এটি একটি সহজ এবং কার্যকর প্রক্রিয়া।
- সংস্থায় আবেদন: যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা থেকে একসঙ্গে অনেক পাসপোর্ট আবেদন জমা দিতে হয়, তাহলে এই ভ্যান আরও কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী মোবাইল ভ্যানটি পাসপোর্ট তৈরির জন্য সেখানে উপস্থিত হবে। ফলে আবেদনকারীরা সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে না গিয়ে প্রতিষ্ঠানেই কাজ সেরে ফেলতে পারবেন।
দেরাদুনে পাসপোর্ট তৈরির সুবিধা
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে পাসপোর্ট অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে প্রায় ৩০ দিন সময় লাগছে। এতে করে অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন। পশ্চিমবঙ্গের মতো বড় শহরে এই সমস্যা না হলেও, দেরাদুনের মতো এলাকায় এটি একটি সাধারণ সমস্যা। তাই স্থানীয়দের জন্য মোবাইল ভ্যান সেবা একটি বড় উপহার হিসেবে আসতে পারে।
এছাড়া, যেসব অঞ্চলে পাসপোর্ট অফিসের দূরত্ব অনেক বেশি, সেইসব অঞ্চলের মানুষ এই সেবার মাধ্যমে অনেক সুবিধা পাবেন। যেমন গ্রামের বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বা কাজের কারণে শহরে আসতে না পারা মানুষদের জন্য এটি হবে বড় স্বস্তির বিষয়।
মোবাইল ভ্যান পরিষেবার সুবিধাগুলো
মোবাইল ভ্যানের মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরির কিছু বিশেষ সুবিধা আছে, যা অনেককেই আকৃষ্ট করছে:
- দূরবর্তী এলাকায় পৌঁছে দেওয়া: প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করা মানুষের জন্য এটি একটি বড় সুবিধা। তাদের আর শহরে এসে লাইনে দাঁড়াতে হবে না। মোবাইল ভ্যান তাদের এলাকায় গিয়ে সেবা দেবে।
- বায়োমেট্রিক্স গ্রহণের সুবিধা: ভ্যানে বায়োমেট্রিক্স ক্যাপচারিং ডিভাইস লাগানো আছে। ফলে আবেদনকারী সহজেই তাদের বায়োমেট্রিক তথ্য ভ্যানে জমা দিতে পারবেন।
- অ্যাপয়েন্টমেন্ট সিস্টেম: অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করার মাধ্যমে এই পরিষেবার সুবিধা নেওয়া যাবে। ফলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার দরকার নেই।
- বিনামূল্যের সেবা: মোবাইল ভ্যানের মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরি করতে কোনো অতিরিক্ত চার্জ লাগবে না। এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে।
- বাড়ির কাছেই সেবা: গ্রাম বা প্রত্যন্ত এলাকার মানুষদের বাড়ির কাছেই পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে, ফলে তাদের শহরে আসার প্রয়োজন পড়বে না।
মোবাইল ভ্যান সার্ভিসের মাধ্যমে প্রাপ্ত সুবিধার সারাংশ
সুবিধা | বিবরণ |
---|---|
সেবা প্রদানের এলাকা | দূরবর্তী গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চল |
অ্যাপয়েন্টমেন্ট সিস্টেম | অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করা যাবে |
বায়োমেট্রিক্স গ্রহণ | ভ্যানে বায়োমেট্রিক্স ক্যাপচারিং ডিভাইস রয়েছে |
অতিরিক্ত চার্জ | কোনো অতিরিক্ত চার্জ নেই |
বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ সুবিধা | অনেক পাসপোর্ট আবেদন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভ্যানের সুবিধা |
মোবাইল ভ্যান সার্ভিসের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এই মোবাইল ভ্যান সার্ভিসের সাফল্যের উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে আরও এলাকায় এই সেবা সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্যান্য অঞ্চলেও এই পরিষেবা চালু করা হতে পারে। যদি মোবাইল ভ্যান সেবার মাধ্যমে দ্রুত এবং কার্যকরভাবে পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, তাহলে এটি দেশব্যাপী একটি সাধারণ সেবা হিসেবে চালু হতে পারে।
পাসপোর্ট তৈরির ঝামেলামুক্ত প্রক্রিয়া হিসেবে মোবাইল ভ্যান সার্ভিস একটি চমৎকার উদ্ভাবন। যারা শহরের বাইরে থাকেন বা যাদের পাসপোর্ট অফিসে যাওয়া কঠিন, তারা সহজেই এই সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারীদের জন্য এটি হবে এক বিশাল স্বস্তির খবর।