আমি আজ এই আর্টিকেলে আপনাদের উপকারের জন্য ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের ভাড়া কত এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছি। কক্সবাজার বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত, মনোরম প্রকৃতি, এবং আকর্ষণীয় স্থানগুলো দেখার জন্য প্রতি বছর দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা এখানে ভিড় করেন। ঢাকা থেকে কক্সবাজার যেতে চাইলে ট্রেন যাত্রা অনেকের পছন্দ।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে চালু হওয়া ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেন সেবা ভ্রমণকে আরও সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করেছে। যারা বাসে ভ্রমণের ঝামেলা এড়াতে চান বা বিমানের খরচ সামলাতে পারছেন না, তাদের জন্য ট্রেন যাত্রা একটি সাশ্রয়ী ও আনন্দদায়ক বিকল্প।
ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের ভাড়া কত
ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার ট্রেনের ভাড়া বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। এটি যাত্রীদের আর্থিক সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে। মেইল ট্রেন এবং আন্তঃনগর ট্রেন এই দুটি ধরনে ট্রেন চলাচল করে। নীচে কিছু ট্রেনের ভাড়ার তালিকা দেওয়া হলো:
শ্রেণী | ভাড়া (টাকা) |
---|---|
মেইল ট্রেন (সর্বনিম্ন) | ১২৫ |
মেইল ট্রেন (সর্বোচ্চ) | ১৭০ |
শোভন | ৪২০ |
শোভন চেয়ার | ৫০৫ |
প্রথম সিট | ৬৭০ |
প্রথম বার্থ | ১০০০ |
স্নিগ্ধা | ৯৬১ |
এসি সিট | ১১৫০ |
এসি বার্থ | ১৭২৫ |
ভাড়ার এই ভিন্নতা আপনাকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী ট্রেনের শ্রেণী বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়। শোভন চেয়ার থেকে শুরু করে এসি বার্থ পর্যন্ত বিভিন্ন বিকল্প রয়েছে। যারা স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণ পছন্দ করেন, তারা এসি সিট বা এসি বার্থ বেছে নিতে পারেন। আর যারা কম খরচে ভ্রমণ করতে চান, তারা শোভন শ্রেণীতে ভ্রমণ করতে পারেন।
ট্রেনের সময়সূচি
ঢাকা থেকে কক্সবাজার রুটে নতুন চালু হওয়া ট্রেনগুলোর সময়সূচি খুবই নির্দিষ্ট। বর্তমানে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে নিয়মিতভাবে দুটি ট্রেন চলাচল করছে। নিচে তাদের সময়সূচি দেওয়া হলো:
গন্তব্য | সময় |
---|---|
ঢাকা থেকে কক্সবাজার | রাত ১০:৩০ এ ঢাকা থেকে ছেড়ে ভোর ৭:২০ এ কক্সবাজার পৌঁছায়। |
সকাল ৬:১৫ এ ঢাকা থেকে ছেড়ে বিকেল ৩:০০ টায় কক্সবাজার পৌঁছায়। | |
কক্সবাজার থেকে ঢাকা | দুপুর ১২:৩০ এ কক্সবাজার থেকে ছেড়ে রাত ৯:১০ এ ঢাকায় পৌঁছায়। |
রাত ৮:০০ টায় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে রাত ৪:৩০ এ ঢাকায় পৌঁছায়। |
ট্রেনগুলো নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনে চলাচল করে, ফলে যাত্রীরা সহজেই তাদের যাত্রাপথ পরিকল্পনা করতে পারেন।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাত্রার সময়
ঢাকা থেকে কক্সবাজার ট্রেনে যেতে সময় লাগে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। এটি বাসের চেয়ে অনেকটাই কম। ট্রেনের মাধ্যমে আপনি ননস্টপ ভ্রমণ করতে পারেন, ফলে ভ্রমণের সময় কম লাগে। বাসের তুলনায় ট্রেনের যাত্রা অনেক মসৃণ ও আরামদায়ক। প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু হওয়ার পর, সরাসরি ট্রেনে কক্সবাজারে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। এটি যাত্রাপথকে অনেকটাই আনন্দদায়ক করে তুলেছে।
নতুন ট্রেন ও তাদের সুবিধা
প্রবাল এক্সপ্রেস এবং হিমছড়ি এক্সপ্রেস হলো ঢাকা থেকে কক্সবাজার রুটে বর্তমানে চালু থাকা ট্রেন। এছাড়া আরও কিছু নতুন ট্রেন প্রস্তাব করা হয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলো হলো:
- প্রবাল এক্সপ্রেস
- হিমছড়ি এক্সপ্রেস
- কক্সবাজার এক্সপ্রেস
- ইনানী এক্সপ্রেস
- লাবণী এক্সপ্রেস
- সেন্ট মার্টিন এক্সপ্রেস
এই ট্রেনগুলো পর্যটকদের সুবিধার জন্য তৈরি করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ট্রেনে পর্যাপ্ত আরামদায়ক ব্যবস্থা রয়েছে যা যাত্রাকে আরও মসৃণ এবং সুবিধাজনক করে তোলে।
কেন ট্রেনে যাতায়াত করবেন?
ট্রেন যাতায়াতের কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা রয়েছে, যেমন:
- নিরাপদ এবং আরামদায়ক: ট্রেনে যাত্রা করতে কোনো অতিরিক্ত ঝুঁকি নেই।
- কম খরচ: বিমানের তুলনায় ট্রেনের ভাড়া অনেকটাই সাশ্রয়ী।
- সময়ের সাশ্রয়: বাসের তুলনায় কম সময়ে যাতায়াত করা যায়।
- প্রাকৃতিক দৃশ্য: ট্রেনে যাত্রা করার সময় আপনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান
কক্সবাজার শুধু সমুদ্র সৈকত নয়, এখানে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। নিচে কক্সবাজারের কিছু জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রের নাম দেওয়া হলো:
- কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত: বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত।
- হিমছড়ি: সুন্দর ঝর্ণা এবং পার্বত্য এলাকা।
- ইনানী সমুদ্র সৈকত: একটি নির্জন এবং শান্তিপূর্ণ সমুদ্র সৈকত।
- আদালগজ দ্বীপ: মোং পুজার জন্য বিখ্যাত।
- সেন্ট মার্টিন দ্বীপ: বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ।
- রামু বৌদ্ধ মন্দির: ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্বসম্পন্ন একটি মন্দির।
কক্সবাজার ভ্রমণের সেরা সময়
কক্সবাজারে ভ্রমণের সেরা সময় হলো শীতকাল। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত আবহাওয়া শীতল এবং মনোরম থাকে। গরম বা বর্ষাকালে ভ্রমণ কিছুটা অসুবিধাজনক হতে পারে।
ভ্রমণ টিপস
কক্সবাজারে ভ্রমণকে আরও আনন্দদায়ক করতে কিছু টিপস মেনে চলা উচিত:
- অগ্রিম টিকিট কাটা: শীতকালে পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে, তাই টিকিট আগে থেকেই কেটে রাখা ভালো।
- পর্যাপ্ত সময় নিয়ে যান: কক্সবাজারে দেখার মতো অনেক কিছু আছে, তাই অন্তত ২-৩ দিন সময় হাতে নিয়ে যান।
- আবহাওয়ার খোঁজ রাখুন: বর্ষাকালে ভ্রমণের সময় আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে নিন।
শেষ কথা
বন্ধুরা, আমার এই ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনের ভাড়া কত লেখাটি পড়ে আশাকরি উপকৃত হয়েছেন। ঢাকা থেকে কক্সবাজার ট্রেন সেবা ব্যবহার করে এখন যাত্রা আরও সহজ এবং আরামদায়ক হয়েছে। সাশ্রয়ী ভাড়ার কারণে এই যাত্রাপথ অনেকের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। যাদের কক্সবাজারে ভ্রমণের পরিকল্পনা রয়েছে, তাদের জন্য এই ট্রেন সেবা একটি আদর্শ পরিবহন ব্যবস্থা। ট্রেনের টিকিট কেটে আপনার পরবর্তী কক্সবাজার ভ্রমণ শুরু করে দিন এবং প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভরা এই স্থানে আপনার ছুটি উপভোগ করুন! আপনি যদি এমন তথ্যমূলক তথ্য সবসময় পেতে চান তবে আমাদের ওয়েবসাইটের মূলপাতা ভিজিট করুন।