পাকিস্তানের আর্থিক সংকট: ভারতের আর্থিক সহায়তা ও ভবিষ্যৎ সম্পর্ক

Written by Madhobi Sen

Updated on:

পাকিস্তানের আর্থিক সংকট: বর্তমানে পাকিস্তান অর্থনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত সংকটপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তাদের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার প্রায় শেষের দিকে। যার ফলে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া হয়ে উঠেছে। খাদ্যদ্রব্য থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। এই সংকট মোকাবিলায় তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে সাহায্য চেয়েছে, তবে এখনও কার্যত কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।

পাকিস্তানের আর্থিক সংকট

পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএমএফ (IMF) এর কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য প্রার্থনা করেছিল। কিন্তু যথেষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও আইএমএফ কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা পাকিস্তানকে দেয়নি। এই কারণে দেশটির দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে। বর্তমানে তারা কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে।

WhatsApp Group Join Now

এমন এক সংকটময় সময়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং মন্তব্য করেছেন, পাকিস্তানকে তারা আইএমএফের চেয়ে বড় অর্থ সহায়তা দিতে পারে, যদি পাকিস্তান ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখে। এই বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বৈরিতার সম্পর্ক রয়েছে।

রাজনাথ সিংয়ের বার্তা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রয়োজন

রাজনাথ সিং তার বক্তব্যে বলেন, ২০১৪-১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য ৯০ হাজার কোটি টাকার স্পেশাল প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। পাকিস্তানের চাওয়া আর্থিক সাহায্যের চেয়ে এই প্যাকেজ ছিল কয়েকগুণ বড়। তার ভাষায়, যদি পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে, তাহলে ভারত আইএমএফের চেয়েও বড় আর্থিক সহায়তা দিতে সক্ষম।

WhatsApp Group Join Now

তিনি পাকিস্তানের জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, “ভারতের সঙ্গে শত্রুতা করে কোনো লাভ নেই। আমরা প্রতিবেশী দেশ। যদি আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকে, তাহলে আমরা আপনাদের আরও বেশি সহায়তা করতে পারবো।”

রাজনাথ সিংয়ের বার্তা স্পষ্ট—পাকিস্তানকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি সম্পর্কের উন্নতির ওপর নির্ভর করবে। পাকিস্তান যদি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে, তবে ভারত তাদের আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করতে পারে।

WhatsApp Group Join Now

পাকিস্তানের জন্য এই প্রস্তাব কতটা কার্যকর?

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এমন প্রস্তাব পাকিস্তানের জন্য বড় একটি সম্ভাবনা হতে পারে। তবে পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা ও সামরিক সম্পর্কের কারণে ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দলগুলোও এই প্রস্তাবকে কীভাবে গ্রহণ করবে, তা গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে, ভারতের আরেক নেতা, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মন্তব্য করেছেন, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) আদতে জম্মু ও কাশ্মীরেরই অংশ। তিনি আরও বলেন, “এই বিধানসভার ভোট শেষে পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে আবার জম্মু ও কাশ্মীরের অংশ করে তোলা হবে।”

WhatsApp Group Join Now

এই মন্তব্যের ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। পাকিস্তান এই ধরনের মন্তব্যকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে দেখছে। কারণ কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান সবসময়ই সংবেদনশীল।

পাকিস্তানের আর্থিক সংকটের গভীরতা

বর্তমানে পাকিস্তানের অর্থনীতি ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায় রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার ফুরিয়ে যাওয়ায় আমদানি পণ্য কেনার জন্য তাদের কাছে প্রয়োজনীয় অর্থ নেই। এর ফলে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অত্যন্ত বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষ খাদ্য ও অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতে হিমশিম খাচ্ছে।

WhatsApp Group Join Now

নিচের টেবিলে পাকিস্তানে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম দেখা যাচ্ছে:

পণ্যপূর্বের মূল্যবর্তমান মূল্য
চাল৭০ PKR প্রতি কেজি১০০ PKR প্রতি কেজি
আটা৫০ PKR প্রতি কেজি৮০ PKR প্রতি কেজি
ডাল৮০ PKR প্রতি কেজি১২০ PKR প্রতি কেজি

এই অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পাকিস্তানের জনগণ ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বৈদেশিক বিনিয়োগের অভাব। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা না পাওয়ায় দেশের আর্থিক অবস্থা আরও দুর্বল হয়েছে।

WhatsApp Group Join Now

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভবিষ্যৎ কি হতে পারে?

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বৈরিতা বিরাজ করছে। তবে অর্থনৈতিক প্রয়োজনের কারণে পাকিস্তানকে এখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার বিষয়ে ভাবতে হতে পারে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাব পাকিস্তানের জন্য নতুন একটি সুযোগ হতে পারে। তবে এই প্রস্তাব বাস্তবে কার্যকর হবে কিনা তা নির্ভর করবে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতাদের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভারত এই প্রস্তাব দিয়ে পাকিস্তানকে একপ্রকার ‘চাপে’ রাখার চেষ্টা করছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ একদিকে কাশ্মীর ইস্যুতে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। এতে পাকিস্তানকে একটি কৌশলগত অবস্থানে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।

WhatsApp Group Join Now

কাশ্মীর ও পিওকে ইস্যু: ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা

কাশ্মীর ইস্যু বরাবরই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি জ্বলন্ত সমস্যা। ভারতের দাবি, পাক অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) জম্মু ও কাশ্মীরের অংশ। অন্যদিকে পাকিস্তান এই দাবি মানতে রাজি নয়। ফলে এই ইস্যুটি দুই দেশের মধ্যে বিরোধের প্রধান কারণ।

যোগী আদিত্যনাথের বক্তব্যের ফলে এই উত্তেজনা নতুন করে শুরু হয়েছে। পাকিস্তান একদিকে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে, অন্যদিকে কাশ্মীর ইস্যুতে তাদের প্রতি চাপ বাড়ছে।

WhatsApp Group Join Now

বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তারা এখন আর্থিক সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থার দিকে তাকিয়ে আছে। তবে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাব পাকিস্তানের জন্য একটি বড় সম্ভাবনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তান যদি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে, তাহলে তারা ভারত থেকে বড় অর্থ সহায়তা পেতে পারে।

তবে এর বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। কারণ দুই দেশের মধ্যে কাশ্মীর ইস্যুতে উত্তেজনা সবসময়ই বিদ্যমান। এখন দেখা যাক, পাকিস্তান এই প্রস্তাব কীভাবে গ্রহণ করে এবং এর পরবর্তী ধাপ কী হতে পারে। এমন আরও খবর পড়তে মূলপাতা ভিজিট করুন।

WhatsApp Group Join Now

Avatar of Madhobi Sen
Madhobi Sen

নমস্কার! আমি Madhobi Sen, এবং গত ৪ বছর ধরে বিভিন্ন বিষয়ে নিবন্ধ লিখছি। বিশেষ করে আজকের রেট, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, আজকের খবর, বিনিয়োগ ও সঞ্চয়, মিউচুয়াল ফান্ড, রোজগার ও আয়, এবং শেয়ার বাজার নিয়ে লিখতে ভালোবাসি। আমি এই বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে গবেষণা করি এবং সহজ ভাষায় পাঠকের কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করি। আমার লক্ষ্য হলো পাঠকদের সঠিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা, যাতে তারা বিনিয়োগ এবং সঞ্চয়ের ব্যাপারে সচেতন হয়ে উঠতে পারে।